বনু কুরাইজা অবরোধ
বনু কুরাইজা অবরোধ সংঘটিত হয় ৬২৭ খ্রিস্টাব্দের (৫ম হিজরির) জিলকদ মাসে, খন্দকের যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে।[৪]
Siege of Banu Qurayza | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
Location of the tribe of Banu Qurayza during the siege. | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
Muslims | Banu Qurayza | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
Muḥammad Abu Bakr Umar Ali ibn Abi Talib Khalid ibn Waleed Sa'd ibn Mu'adh |
Huyayy ibn Akhtab Ka'b ibn Asad | ||||||
শক্তি | |||||||
3,000 infantry, 30 horsemen | Unknown[১] | ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
2 killed[১] |
মদিনায় বসবাসরত ইহুদি গোত্র বনু কুরাইজা একসময় মুসলিমদের মিত্র ছিল। এমনকি খন্দকের যুদ্ধে খন্দক খননে তারা মুসলিমদের সরঞ্জামও সরবরাহ করেছিল। কিন্তু, মুহাম্মাদ (সা.)-এর ইহুদি-বিরোধী কিছু কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এই যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। আল-ওয়াকিদি নামে একজন ইতিহাসবিদ দাবি করেন যে, মুহাম্মাদ (সা.) ও বনু কুরাইজার মধ্যে যে চুক্তি ছিল, তা ভঙ্গ হয়ে যায়। অন্যদিকে নরম্যান স্টিলম্যান ও মন্টগোমেরি ওয়াট এ ধরনের চুক্তির অস্তিত্ব নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেন। তবে ওয়াট মনে করেন, কুরাইজা গোত্র মুহাম্মাদ (সা.)-এর শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য না করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। সাইফুর রহমান মোবারকপুরি, পিটার্স, স্টিলম্যান, গিউলাম, ইনামদার এবং ইবনে কাসিরের মতে, মক্কাবাসীরা প্রত্যাহারের দিনই মুহাম্মাদ (সা.) বনু কুরাইজার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। মুসলিম ঐতিহ্য অনুযায়ী, তিনি আল্লাহর নির্দেশেই এ কাজ করেন। ইবনে কাসিরও উল্লেখ করেন যে, মুহাম্মাদ (সা.) এর সাথে চুক্তি ভঙ্গের কারণেই তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চালানো হয়।
বনু কুরাইজার ২৫ দিনব্যাপী অবরোধ চলে, যার পর তারা আত্মসমর্পণ করে। মদিনার আরব গোত্রগুলোর মধ্যে বনু আউস গোত্র মুহাম্মাদ (সা.)-এর অনুসারী হয়ে আনসার নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। বনু কুরাইজা যেহেতু বনু আউসের মিত্রগোত্র ছিল, সেহেতু তাদের জন্য বনু আউস নেতৃবৃন্দ মুহাম্মাদ (সা.)-এর কাছে নমনীয় আচরণের আবেদন করে। এতে মুহাম্মাদ (সা.) সম্মত হন এবং বনু আউস থেকে একজন ব্যক্তিকে রায় প্রদানের দায়িত্ব দেন। এরপর তারা সা'দ ইবনে মুয়াজকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নির্বাচিত করে। তিনি তখন তীরবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত ছিলেন। তবুও তিনি রায় দেন, "গোত্রের পুরুষদের হত্যা করা হবে, সম্পদ বণ্টন করে দেওয়া হবে এবং নারী ও শিশুদের দাস হিসেবে নেওয়া হবে।" মুহাম্মাদ (সা.) 'সপ্তম আসমানের উপরে' স্বয়ং আল্লাহ কর্তৃক ঘোষিত ফরমানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই রায়কে অনুমোদন দেন। এরপর, বালেগ বয়সে পৌঁছে যাওয়া গোত্রের প্রায় সকল পুরুষকেই শিরশ্ছেদ করা হয়। মুসলিম বিধিবেত্তা আত-তাবারি ৬০০ থেকে ৯০০ জন পুরুষের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেন। সুন্নি হাদিসগ্রন্থে নিহতের সংখ্যা উল্লেখ না থাকলেও, একজন মহিলা এবং বালেগ বয়সের সকল পুরুষকে হত্যার কথা বলা হয়েছে। ইবনে কাসিরের মতে, কুরআনের ৩৩:২৬-২৭ এবং ৩৩:৯-১০ আয়াতসমূহ বনু কুরাইজা আক্রমণ সম্পর্কিত।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ Rahman al-Mubarakpuri, Safiur (২০০৫), The Sealed Nectar, Darussalam Publications, পৃষ্ঠা 201–205, আইএসবিএন 9798694145923[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] (online)
- ↑ ক খ Ibn Kathir; Saed Abdul-Rahman (২০০৯), Tafsir Ibn Kathir Juz'21, MSA Publication Limited, পৃষ্ঠা 213, আইএসবিএন 9781861796110 (online ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে)
- ↑ Al-Tabari (১৯৯৭), History of the Prophets and Kings. Volume 8, Victory of Islam, Michael Fishbein কর্তৃক অনূদিত, State University of New York Press, পৃষ্ঠা 35–36, আইএসবিএন 9780791431504
- ↑ Rodgers 2012, পৃ. 134।