দ্বিজাতি তত্ত্ব
দ্বিজাতি তত্ত্ব হল এমন একটি মতাদর্শ যেখানে ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের প্রাথমিকভাবে কেবলমাত্র তাদের ধর্মের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমান এবং হিন্দু দুটি স্বতন্ত্র জাতীয়তার পরিচয় দেয়া হয়েছে, এবং যেখানে ভাষা, বর্ণ এবং অন্যান্য বৈশিষ্টের তুলনায় ধর্মকে বেশি প্রধান্য দেয়া হয়েছে।[১][২] পাকিস্তান আন্দোলন এবং ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের অন্যতম কারণ ছিলো এই দ্বিজাতি তত্ত্ব।[৩]
- পাকিস্তান
- দ্বিজাতি শব্দের অর্থ দুটি জাতি। হিন্দু এবং মুসলমান কে ভারতীয় উপমহাদেশে দুটি ভাগে বিভক্ত করার জন্য একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় এবং এর মূল কারণ ছিল তৎকালীন সময়ে হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে বেশকিছু সংঘাত এবং অসমতা। এর প্রেক্ষিতে মূলত হিন্দু এবং মুসলমানকে দুটি আলাদা জাতিতে তথা রাষ্ট্রে বিভক্ত করার জন্য দ্বিজাতি তত্ত্ব উপস্থাপন করা হয় ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের প্রথমদিন। এবং এই তত্ত্বটি উপস্থাপনের পিছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। অনেকে মনে করেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বি-জাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে লাহোর প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল এবং মুসলিম জাতীয়তাবাদ পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করেছিল। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের প্রথমদিন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বিখ্যাত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ঘোষণা দেন। উক্ত ঘোষণায় তিনি বলেন, ভারতের সমস্যা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে নয়, দুই জাতির মধ্যে। এর মাধ্যমে মূলত ভারতে মুসলমান এবং হিন্দুদের মধ্যে জাতিগত পার্থক্য এবং অসমতা দেখা দিয়েছিল তার সম্পর্কে বলা হয়।
সে সময় হিন্দু এবং মুসলিম দের মধ্যে এতটা পার্থক্য তৈরী হয়েছিল যে জিন্নাহ মনে করেছিলেন তাদেরকে একত্রে রাখা সম্ভব নয়। তাদের আলাদা আলাদা জাতি হিসেবে আলাদা আলাদা স্থানে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে এবং কোনভাবেই তাদেরকে একত্রিত করা যাবে না। যেহেতু তারা দুটি স্বতন্ত্র এবং পৃথক জাতি, তাই তাদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র তৈরি করে দেয়াই সমাধান মনে করেন। লাহোর অধিবেশনে জিন্নাহ মুসলমানদের পৃথক জাতি হিসেবে চিহ্নিত করেন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর এরূপ ব্যাখ্যার ভিত্তিতে বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ মুসলিম লীগের অধিবেশনে মুসলমানদের পৃথক আবাসভূমি স্থাপনের রূপরেখা সম্বলিত একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নির্দেশে চৌধুরী বালেকুজ্জামান উক্ত প্রস্তাব সমর্থন করেন।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Robin W. Winks, Alaine M. Low (২০০১), The Oxford history of the British Empire: Historiography, Oxford University Press, আইএসবিএন 9780199246809,
... At the heart of the two-nation theory was the belief that the Indian Muslims' identity was defined by religion rather than language or ethnicity ...
- ↑ Liaquat Ali Khan (১৯৪০), Pakistan: The Heart of Asia, Thacker & Co. Ltd.,
... There is much in the Musalmans which, if they wish, can roll them into a nation. But isn't there enough that is common to both Hindus and Muslims, which if developed, is capable of molding them into one people? Nobody can deny that there are many modes, manners, rites and customs which are common to both. Nobody can deny that there are rites, customs and usages based on religion which do divide Hindus and Muslmans. The question is, which of these should be emphasized ...
- ↑ "Two-Nation Theory Exists"। Pakistan Times। ১১ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১২।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Official website, Nazaria-e-Pakistan Foundation। "The Two-Nation Theory"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২২। [অকার্যকর সংযোগ]
- MarkTheTruth for ever, So it could never be changed। "Defending The Ideology"। ২০০৯-১০-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২৭।
- Story of Pakistan website, Jin Technologies (Pvt) Limited। "The Ideology of Pakistan: Two-Nation Theory"। ২০০৬-০৫-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২২।
- A critique of the Two Nation Theory: Sharpening the saw; by Varsha Bhosle; July 26, 1999; Rediff India