অম্ল
অম্ল হচ্ছে একটি রাসায়নিক পদার্থ। যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ ও জল উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা অ্যাসিড (Acid) বলে।Acid শব্দটির উৎপত্তি অ্যাসিডাস (Acidus) কিংবা এসিয়ার হতে; যার অর্থ টক। টক স্বাদযুক্ত সব বস্তুর মধ্যে অ্যাসিড থাকে। তেঁতুল, লেবু প্রভৃতিতে জৈব অ্যাসিড বিদ্যমান। এসকল অ্যাসিড অতি অল্প পরিমাণে থাকে বলে ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত অ্যাসিড (যেমন : হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড ইত্যাদি) অত্যন্ত তীব্র। এগুলোকে অজৈব বা খনিজ অ্যাসিড বলে।[১] অম্ল,ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপাদন করে।
অ্যাসিড চেনার পদ্ধতি ও শনাক্তকরণ
[সম্পাদনা]বেশিরভাগ অ্যাসিডে প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকে। তবে হাইড্রোজেন ছাড়াও এসিড হওয়া সম্ভব যেমন লুইস এসিড , , ইত্যাদি। আবার বিশুদ্ধ অনেক শক্তিশালী লুইস এসিড। [২]এটাকে সুপার এসিড ও বলা হয়।[৩] যদি কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণে নীল লিটমাসকে লাল করে তবে তা অ্যাসিড। যেমন : হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (), সালফিউরিক অ্যাসিড () প্রভৃতি অ্যাসিডের সংকেত থেকে দেখা যাচ্ছে যে, এদের মধ্যে সাধারণ মৌলিক পদার্থ হাইড্রোজেন ( H)। এভাবে অ্যাসিডসমূহকে সহজভাবে চেনা যেতে পারে।
নির্দেশক ও এর ব্যবহার
[সম্পাদনা]যেসকল রাসায়নিক পদার্থ এসিড ও ক্ষারককে শনাক্ত করে এবং যা এসিড ও ক্ষারকের সংস্পর্শে এসে রং পরিবর্তন করে তাদেরকে নির্দেশক বলে। সাধারণত বিজ্ঞানাগারে এসিড শনাক্ত করার জন্য লিটমাস দ্রবণ বা কাগজ, মিথাইল অরেঞ্জ, ফেনোফথ্যালিন এই তিন ধরনের নির্দেশক ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গাছের নির্যাস ( যেমন : জবা ফুলের রস ইত্যাদি) নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
নির্দেশকের নাম | এসিডের মধ্যে রং | ক্ষারকের মধ্যে রঙ |
---|---|---|
লিটমাস দ্রবণ | লাল | নীল |
ফেনফথ্যালিন | বর্ণহীন | গোলাপি |
মিথাইল অরেঞ্জ | লাল | হলুদ |
নির্যাসের মধ্যে এসিড ও ক্ষারকের বর্ণ :
নির্যাসের নাম | এসিডের মধ্যে রঙ | ক্ষারকের মধ্যে রঙ |
---|---|---|
জবা ফুলের রস | লাল | নীল |
মতবাদ
[সম্পাদনা]অম্ল ও ক্ষারকের বিষয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানীগণ নানাধরনের মতবাদ পোষণ করেছেন।এদের মধ্যে নিম্নোক্ত মতবাদসমূহ উল্লেখযোগ্য :
ব্রনস্টেড - লাওরির মতবাদ
[সম্পাদনা]জোহানেস ব্রনস্টেড (১৮৭৯-১৯৪৭) ও থমাস লাওরি ( ১৮৭৪-১৯৩৬) ১৯২৩ সালে ডেনমার্ক ও ইউকে -তে বসে অম্ল ও ক্ষারক সর্ম্পকে মতবাদ পোষণ করেন। তাদের মতে অ্যাসিড হল এমন একটি অণু যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন ( হাইড্রোজেন H+) দান করতে সক্ষম এবং ক্ষারক হল এমন একটি অণু যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন গ্রহণ করে। সাধারণভাবে বলা যায় যে, অম্ল হল প্রোটন দাতা ও ক্ষারক হল প্রোটন গ্রহীতা।
অ্যাসিডের উদাহরণ
[সম্পাদনা]নিম্নে কয়েকটি অ্যাসিডের উদাহরণ উল্লেখিত হল:
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]২। বিজ্ঞান অষ্টম শ্রেণি
৩। বিজ্ঞানের জটিল সূত্রের সহজ ব্যাখ্যা - এইচ কে রুমি
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ১। উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - হাজারী ও নাগ।
- ↑ "The Lewis Definitions of Acids and Bases"। chemed.chem.purdue.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-০১।
- ↑ "Superacid - an overview | ScienceDirect Topics"। www.sciencedirect.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-০১।