১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ
তারিখ | ৯ জুন – ২৫ জুন |
---|---|
তত্ত্বাবধায়ক | আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল |
ক্রিকেটের ধরন | একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট |
প্রতিযোগিতার ধরন | ডাবল রাউন্ড রবিন ও নক-আউট |
আয়োজক | ইংল্যান্ড |
বিজয়ী | ভারত (১ম শিরোপা) |
রানার-আপ | ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
অংশগ্রহণকারী দলসংখ্যা | ৮ |
খেলার সংখ্যা | ২৭ |
দর্শক সংখ্যা | ২,৩২,০৮১ জন (ম্যাচ প্রতি ৮,৫৯৬ জন) |
সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী | ডেভিড গাওয়ার (৩৮৪) |
সর্বাধিক উইকেটধারী | রজার বিনি (১৮) |
১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ বা প্রুডেন্সিয়াল বিশ্বকাপ আইসিসি আয়োজিত ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার ৩য় আসর। ৯-২৫ জুন, ১৯৮৩ তারিখ পর্যন্ত প্রতিযোগিতাটি ৩য়বারের মতো ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি দল ৬০ ওভারব্যাপী ইনিংসে অংশ নেয়। সনাতনী ধাঁচের সাদা পোশাক এবং লাল বল ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি খেলায়ই দিনের বেলায় এবং খুব সকালে অনুষ্ঠিত হয়।
আটটি দেশ এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বিশ্বকাপটি বেশ নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ ছিল। ভারত এবং জিম্বাবুয়ের ন্যায় দেশগুলো ঐ সময় তেমন ভাল খেলেনি। কিন্তু বিশ্বকাপে তারা যথাক্রমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সকলকে আশ্চর্যান্বিত করেছিল। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারত এবং গত দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন ও টুর্নামেন্টের সেরা দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ অংশ নেয়। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ভারত এ বিশ্বকাপ জয় করে। ভারতের অধিনায়ক কপিল দেব প্রুডেন্সিয়াল ট্রফি লাভ করেন। তবে, ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে কোন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয় নাই।
প্রতিযোগিতার ধরন
[সম্পাদনা]বিশ্বকাপে ৮টি দেশের জাতীয় ক্রিকেট দল অংশগ্রহণ করে। প্রাথমিক পর্বের খেলাগুলো দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চারটি দল একে-অপরের বিরুদ্ধে দুইবার করে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। প্রতি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় দু'টি দল সেমি-ফাইনালে পৌঁছায়। সেমি-ফাইনালের বিজয়ী দলগুলো ফাইনালে লড়ে। প্রতিটি দল ৬০ ওভারব্যাপী ইনিংসে অংশ নেয়।
ট্রফি
[সম্পাদনা]চূড়ান্ত খেলায় ভারত ক্রিকেট দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাভূত করে ট্রফি জয় করে। পরবর্তীতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সদর দফতরে এক সহিংস ঘটনায় এ ট্রফিটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। ভারতীয় রাজনৈতিক দল শিবসেনার কিছুসংখ্যক কর্মী এতে অংশ নিয়েছিল।[১] পরবর্তীতে শিবসেনা কর্তৃপক্ষ জানায় যে তারা পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের ভারত সফরকে কেন্দ্র করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। উল্লেখ্য যে, কার্গিল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যাপক অবনতি ঘটেছিল।
অংশগ্রহণকারী দল
[সম্পাদনা]নিম্নবর্ণিত ৮টি দল এবারের বিশ্বকাপের মূল খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে। তন্মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আগত জিম্বাবুয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট মর্যাদাবিহীন দল হিসেবে খেলতে নামে।
গ্রুপ এ | গ্রুপ বি |
---|---|
ইংল্যান্ড | ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
পাকিস্তান | ভারত |
নিউজিল্যান্ড | অস্ট্রেলিয়া |
শ্রীলঙ্কা | জিম্বাবুয়ে |
মাঠসমূহ
[সম্পাদনা]মাঠ | শহর | দর্শক ধারণ ক্ষমতা | খেলার সংখ্যা | |
---|---|---|---|---|
লর্ড’স ক্রিকেট গ্রাউন্ড | লন্ডন | ৩০,০০০ | ৩ | |
ট্রেন্ট ব্রিজ | নটিংহাম | ১৫,৩৫০ | ৩ | |
হেডিংলি স্টেডিয়াম | লিডস | ১৪,০০০ | ৩ | |
দি ওভাল | লন্ডন | ২৩,৫০০ | ৩ | |
এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড | বার্মিংহাম | ২১,০০ | ৩ | |
কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ড | ডার্বি | ৯,৫০০ | ১ | |
কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ড | ব্রিস্টল | ১৬,০০০ | ১ | |
কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ড | টাউনটন | ৬,৫০০ | ১ | |
কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ড | চেমসফোর্ড | ৬,৫০০ | ১ | |
সেন্ট হেলেন্স রাগবি এন্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ড | সনসী, ওয়েলস | ৪,৫০০ | ১ | |
গ্রেস রোড | লিচেস্টার | ১২,০০০ | ১ | |
ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ড | ম্যানচেস্টার | ১৯,০০০ | ৩ | |
কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ড | সাউদাম্পটন | ৭,০০০ | ১ | |
নিউ রোড | ওরচেস্টার | ৪,৫০০ | ১ | |
নেভিল গ্রাউন্ড | রয়েল টানব্রিজ ওয়েলস | ৬,০০০ | ১ |
দলসমূহ
[সম্পাদনা]গ্রুপ পর্ব
[সম্পাদনা]গ্রুপ এ
[সম্পাদনা]দলের নাম | পয়েন্ট | খেলা | জয় | পরাজয় | নো রেজাল্ট | গড় রান |
---|---|---|---|---|---|---|
ইংল্যান্ড | ২০ | ৬ | ৫ | ১ | ০ | ৪.৬৭১ |
পাকিস্তান | ১২ | ৬ | ৩ | ৩ | ০ | ৪.০১৪ |
নিউজিল্যান্ড | ১২ | ৬ | ৩ | ৩ | ০ | ৩.৯২৭ |
শ্রীলঙ্কা | ৪ | ৬ | ১ | ৫ | ০ | ৩.৭৫২ |
গ্রুপ বি
[সম্পাদনা]দলের নাম | পয়েন্ট | খেলা | জয় | পরাজয় | নো রেজাল্ট | গড় রান |
---|---|---|---|---|---|---|
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ২০ | ৬ | ৫ | ১ | ০ | ৪.৩০৮ |
ভারত | ১৬ | ৬ | ৪ | ২ | ০ | ৩.৮৭০ |
অস্ট্রেলিয়া | ৮ | ৬ | ২ | ৪ | ০ | ৩.৮০৮ |
জিম্বাবুয়ে | ৪ | ৬ | ১ | ৫ | ০ | ৩.৪৯২ |
নক-আউট পর্ব
[সম্পাদনা]সেমি-ফাইনাল | ফাইনাল | |||||
২২ জুন, ১৯৮৩ - ওল্ড ট্রাফোর্ড, ম্যানচেস্টার | ||||||
ইংল্যান্ড | ২১৩ | |||||
২৫ জুন, ১৯৮৩ - লর্ডস, লন্ডন | ||||||
ভারত | ২১৭/৪ | |||||
ভারত | ১৮৩ | |||||
২২ জুন, ১৯৮৩ - দি ওভাল, লন্ডন | ||||||
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১৪০ | |||||
পাকিস্তান | ১৮৪/৮ | |||||
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১৮৮/২ | |||||
সেমি-ফাইনাল
[সম্পাদনা]ফাইনাল
[সম্পাদনা]চূড়ান্ত খেলায় টসে হেরে ভারত ব্যাটিংয়ে নামে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বসেরা বোলিং আক্রমণের মুখে পড়ে দলটি মাত্র ১৮৩ রানে অল-আউট হয়ে যায়। কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত, মহিন্দর অমরনাথ কিছুটা অ্যান্ডি রবার্টস, ম্যালকম মার্শাল, জোয়েল গার্নার এবং মাইকেল হোল্ডিংয়ের বোলিং আক্রমণ আটকাতে পেরেছিলেন। নিচের সারির ব্যাটসম্যানের অংশগ্রহণে ৫৮.৪ ওভার পর্যন্ত খেলতে পেরেছিল ভারত। ভারতীয় ইনিংসে শ্রীকান্ত, সন্দ্বীপ পাতিল এবং মদন লাল একটি করে ছক্কা হাকান।
পরবর্তীতে অনুকূল আবহাওয়া এবং পীচের সুবিধা নিয়ে সঠিকমানের বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বখ্যাত ব্যাটিং লাইন-আপ ভেঙ্গে পড়ে। গত দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল মাত্র ১৪০ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ফলে, ভারত ৪৩ রানে বিজয়ী হয় এবং ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটায়। অমরনাথ এবং মদন লাল - উভয়েই ৩টি করে উইকেট নেন। এছাড়াও, ভারতের অধিনায়ক কপিল দেব প্রায় ২০ গজ দূর থেকে দৌঁড়িয়ে এসে ভিভ রিচার্ডসের ক্যাচ লুফে নেয়া ছিল উল্লেখযোগ্য ঘটনা। মহিন্দর অমরনাথ সুনিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ৭ ওভারে মাত্র ১২ রান দেন। তার অল-রাউন্ড নৈপুণ্যে বিচারকদের বিবেচনায় তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার প্রদান করা হয়।[২]
ব
|
||
- ওয়েস্ট ইন্ডিজ টসে জয়লাভ করে ফিল্ডিং বেছে নেয়।
পরিসংখ্যান
[সম্পাদনা]
|
|
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "CNN - Indian Hindu group backs down in anti-Pakistan cricket row"। সিএনএন। ১০ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ FINAL: India v West Indies at Lord's, 25 Jun 1983