Location via proxy:   [ UP ]  
[Report a bug]   [Manage cookies]                
বিষয়বস্তুতে চলুন

পিঁয়াজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(পেঁয়াজ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

পিঁয়াজ
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: Tracheophyta
শ্রেণী: Liliopsida
বর্গ: Asparagales
পরিবার: Amaryllidaceae
গণ: Allium
প্রজাতি: Allium cepa
দ্বিপদী নাম
Allium cepa
L.
প্রতিশব্দ

Porrum cepa (L.) Rchb.
Kepa esculenta Raf.
Cepa vulgaris Garsault
Cepa rubra P.Renault
Cepa pallens P.Renault
Cepa esculenta Gray
Cepa alba P.Renault
Ascalonicum sativum P.Renault
Allium salota Dostál
Allium pauciflorum Willd. ex Ledeb.
Allium nigritanum A.Chev.
Allium napus Pall. ex Kunth
Allium esculentum Salisb.
Allium cumaria Buch.-Ham. ex Wall.
Allium commune Noronha
Allium cepaeum St.-Lag.
Allium cepa var. viviparum
Allium cepa var. tripolitanum
Allium cepa var. solaninum
Allium cepa var. sanguineum
Allium cepa var. rosum
Allium cepa var. praecox
Allium cepa var. portanum
Allium cepa var. multiplicans
Allium cepa var. luteum
Allium cepa var. lisboanum
Allium cepa var. jamesii
Allium cepa var. hispanicum
Allium cepa var. globosum
Allium cepa var. flandricum
Allium cepa var. crinides
Allium cepa var. bifolium
Allium cepa var. argenteum
Allium cepa var. anglicum
Allium cepa var. aggregatum
Allium ascalonicum var. sterile
Allium ascalonicum f. rotterianum
Allium ascalonicum var. fertile
Allium ascalonicum var. condensum
Allium aobanum Araki
Allium angolense Baker

পিঁয়াজ (বাংলা উচ্চারণ: [পিঁয়াজ] (শুনুন)) বা পেঁয়াজ হলো অ্যালিয়াম গোত্রের সকল উদ্ভিদ। সাধারণ পিঁয়াজ বলতে অ্যালিয়াম সেপা কে বোঝায়। পিঁয়াজ বিশ্বব্যাপী চাষাবাদ করা হয়।শ্যালট পিঁয়াজের একটি জাত যা ২০১০ সাল পর্যন্ত আলাদা প্রজাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। রসুন, চীনা পিঁয়াজ ইত্যাদি পিঁয়াজের কাছাকাছি প্রজাতি। অ্যালিয়াম গোত্র পিঁয়াজের মত আরো বিভিন্ন প্রজাতি বহন করে থাকে, যা খাদ্যের জন্য চাষাবাদ করা হয়ে থাকে যেমন-জাপানি বাঞ্চিং পিঁয়াজ, গাছ পিঁয়াজ, কানাডা পিঁয়াজ ইত্যাদি।

পিঁয়াজ একটি দ্বিবর্ষী অথবা বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ কিন্তু বার্ষিক উদ্ভিদ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং প্রথম ক্রমবর্ধমান বছরে সংগ্রহ করা হয়। পিঁয়াজ গাছের ফাঁপা, নীলচে -সবুজ পাতা আছে, গাছের গোড়া স্ফীত আকার ধারণ করে যখন পর্যাপ্ত দিনের আলো পায়, একে বালব বলে। বালব গঠিত হয় ছোট, সংকুচিত, ভূগর্ভস্থ কান্ড দ্বারা যা পরিবেষ্টিত থাকে পরিবর্তিত মাংসল শল্কপত্র দিয়ে। পিঁয়াজ বিভিন্ন পোকা এবং রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয় বিশেষ ভাবে অনিয়ন ফ্লাই, অনিয়ন এলওর্ম, বিভিন্ন ফাংগাস যারা পিঁয়াজ পচার জন্য দায়ী। অ্যালিয়াম কেপার বিভিন্ন জাত যেমন শ্যালট বহু বালব তৈরি করে। পিঁয়াজ সারা বিশ্বে ব্যবহৃত হয়। খাদ্যদ্রব্য হিসেবে এটা রান্না করে পরিবেশিত হয়, বিভিন্ন মুখরোচক খাবার হিসেবেও পিয়াজ ব্যবহৃত হয়। আচার অথবা চাটনী তৈরীতেও ব্যবহার করা হয়। পিঁয়াজে এক বিশেষ কেমিক্যাল আছে যা চোখে জ্বালা তৈরি করে।

বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]

পেঁয়াজ গাছে ভূনিম্নস্থ পরিবর্তিত কাণ্ড দেখা যায়। কাণ্ডটি ছোট চাকতির মত। এটি ঝাঁজ যুক্ত রসালো শল্কপত্র দ্বারা আবৃত থাকে। শল্কপত্রগুলি একটির পর একটি সাজানো থাকে। এই পরিবর্তিত কাণ্ড পুটিত কাণ্ড নামে পরিচিত। কাণ্ডের নিচের দিকে এক গোছা অস্থানিক মূল থাকে। উপরের অংশে পাতা, ফুল দেখা যায়। পেঁয়াজের রসালো শল্কপত্র এবং পাতা কাঁচা অবস্থায় বা রান্না করে খাওয়া হয়।[]

ব্যবহার

[সম্পাদনা]

মানবসভ্যতার ইতিহাসের আদিযুগ থেকেই পিঁয়াজের ব্যবহার শুরু হয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সব সমাজেই বিভিন্ন রান্নায় পিঁয়াজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে কাঁচা, জমানো, আচার, চূর্ণ, কুঁচি, ভাজা, এবং শুকনো করা পিঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। শুধু পিঁয়াজ সাধারণত সরাসরি খাওয়া হয়না, বরং পিঁয়াজ কুঁচি বা ফালি করে কাঁচা অবস্থায় সালাদএ অথবা রান্নাতে উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পিঁয়াজ বিভিন্ন রকমের হতে পারে - ঝাঁঝালো, মিষ্টি, তিতা।

বাংলাদেশী লাল পিঁয়াজ

পিঁয়াজকে ভিনেগার বা সিরকাতে ডুবিয়ে আচার বানানো হয়। দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্যে পিঁয়াজ একটি মৌলিক উপকরণ, এবং প্রায় সব রান্নাতেই পিঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। পিঁয়াজের কোষের আকার বেশ বড় বলে বিজ্ঞান শিক্ষায় মাইক্রোস্কোপের ব্যবহার ও কোষের গড়ন শেখাতে পিঁয়াজের কোষ ব্যবহার করা হয়।[]

পুষ্টিগুণ

[সম্পাদনা]
পিঁয়াজ, কাঁচা অবস্থায়
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি১৬৬ কিজু (৪০ kcal)
৯.৩৪ g
চিনি৪.২৪ g
খাদ্য আঁশ১.৭ g
০.১ g
১.১ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
থায়ামিন (বি)
৪%
০.০৪৬ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
২%
০.০২৭ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
১%
০.১১৬ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
২%
০.১২৩ মিগ্রা
ভিটামিন বি
৯%
০.১২ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
৫%
১৯ μg
ভিটামিন সি
৯%
৭.৪ মিগ্রা
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
২%
২৩ মিগ্রা
লৌহ
২%
০.২১ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
৩%
১০ মিগ্রা
ম্যাঙ্গানিজ
৬%
০.১২৯ মিগ্রা
ফসফরাস
৪%
২৯ মিগ্রা
পটাশিয়াম
৩%
১৪৬ মিগ্রা
জিংক
২%
০.১৭ মিগ্রা
অন্যান্য উপাদানপরিমাণ
পানি৮৯.১১ g
Fluoride1.1 µg

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

পেঁয়াজে আছে ভিটামিন এ, সি, ই, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। জ্বরে দেহের তাপমাত্রা বেশি থাকলে পাতলা করে কাটা পেঁয়াজ কপালে রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যে তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়।

উৎপাদন

[সম্পাদনা]

বিশ্বে পিঁয়াজ উৎপাদনে প্রধান দেশ হচ্ছে চীন ও ভারত।

পেঁয়াজ ফুল

ভারতে পিঁয়াজ সবথেকে বেশি আসে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে। মহারাষ্ট্র ছাড়া দক্ষিণ ভারত, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাটে পিঁয়াজ বিপুল চাষাবাদ হয়।[] জরুরি ক্ষেত্রে পাকিস্তান হয়ে ভারতে পিঁয়াজ আমদানি হয় আফগানিস্তান থেকে। বাংলাদেশও প্রচুর পরিমানে পিঁয়াজ উৎপাদন হয়।

শ্রেণিবিন্যাস এবং উৎপত্তি

[সম্পাদনা]

পিঁয়াজের বিভিন্ন জাতের মধ্যে মুড়িকাটা জাতের ফলন বেশ ভালো।

শিকড়, পাতা এবং কন্দ

১৭৫৩ সালে বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস পিঁয়াজের বর্ণনা দেন ও বৈজ্ঞানিক নাম দেন Allium cepa[] পিঁয়াজ কন্দ পিঁয়াজ নামেও পরিচিত।[][][]

  • Allium cepa var. aggregatum – জি. ডন
  • Allium cepa var. bulbiferum – রেগেল
  • Allium cepa var. cepa – লিনিয়াস
  • Allium cepa var. multiplicans – এল.এইচ. বেইলি
  • Allium cepa var. proliferum – (মোয়েঞ্চ) রেগেল
  • Allium cepa var. solaninum – অ্যালেফ
  • Allium cepa var. viviparum – (মেটজ) মাঁসফ.[][]
অণুবীক্ষণ যন্ত্রে পিঁয়াজের কোষ

চাষাবাদ

[সম্পাদনা]
বৃহৎ পরিসরে চাষাবাদ
২০১৯-এ পিঁয়াজ উৎপাদন
দেশ টন
 গণচীন ১০,০১,২৫৫
 জাপান ৫,২৬,৭১৮
 মালি ৫,২২,৯৯৭
 দক্ষিণ কোরিয়া ৪,৫৮,৯৪৯
বিশ্ব ৪৪,৯১,২৪৬
উৎস: খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (রাষ্ট্রসংঘ)[১০]

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. বই উদ্ধৃতি=জীবন বিজ্ঞান| লেখক=তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী| শিরোনাম=পেঁয়াজ | প্রকাশক=সর্ব ভারতীয় শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী কংগ্রেস, পশ্চিমবঙ্গ শাখা| বছর=১৯৮৩ | পাতা=৯১
  2. "Genetics Teaching Vignettes: Elementary School"। ২০০৪-০৬-১৫। ২০০৭-১২-১৭ তারিখে মূল (html) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২৮ 
  3. "Onion in India" 
  4. Linnaeus, Carolus (১৭৫৩)। Species Plantarum (লাতিন ভাষায়)। 1। Stockholm: Laurentii Salvii। পৃষ্ঠা 262। 
  5. "Allium cepa var. cepa"জার্মপ্লাজম রিসোর্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (জিআরআইএন)কৃষি গবেষণা পরিসেবা (এআরএস), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  6. Eric Block, "Garlic and Other Alliums: The Lore and the Science" (Cambridge: Royal Society of Chemistry, 2010)
  7. Brewster, James L. (১৯৯৪)। Onions and other vegetable Alliums (1st সংস্করণ)। Wallingford, UK: CAB International। পৃষ্ঠা 16আইএসবিএন 978-0-85198-753-8 
  8. "Allium cepa" (ইংরেজি ভাষায়)। ন্যাচারাল রিসোর্সেস কনসারভেশন সার্ভিস প্ল্যান্টস ডেটাবেস। ইউএসডিএ 
  9. "Allium cepa L."ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্সোনোমিক ইনফরমেশন সিস্টেম 
  10. "Production of onions and shallots (green) in 2019: Crops/World Regions/Production Quantity from pick lists"। Food and Agriculture Organization, Statistics Division (FAOSTAT)। ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • Block, E. (২০১০)। Garlic and Other Alliums: The Lore and the Science। Royal Society of Chemistry (UK)। আইএসবিএন 978-0-85404-190-9 
  • Gripshover, Margaret M., and Thomas L. Bell, "Patently Good Ideas: Innovations and Inventions in U.S. Onion Farming, 1883–1939," Material Culture (Spring 2012), vol 44 pp 1–30.
  • Sen, Colleen T. (2004). Food culture in India. Greenwood Publishing. আইএসবিএন ০-৩১৩-৩২৪৮৭-৫.

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]