বনু কুরাইজা
বনু কুরাইজা (আরবি: بني قريظة; بنو قريظة) ছিল ৭ম শতাব্দীতে মদিনার একটি ইহুদি গোত্র। খন্দকের যুদ্ধের পর মুসলিমদের সাথে তাদের সংঘর্ষ সৃষ্টি হয় এবং তারা আত্মসমর্পণ করে।[১] পরে বিচারে গোত্রের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সদস্যদের হত্যা এবং নারী ও শিশুদের দাস হিসেবে বন্দী করা হয়।
ধারণা করা হয় যে ইহুদি-রোমান যুদ্ধের সময় ইহুদি গোত্রগুলো হেজাজে আগমন করে এবং কৃষিকাজ শুরু করে। ফলে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে তারা প্রাধান্য বিস্তার করে।[২][৩] তবে পরবর্তীতে বনু আউস ও বনু খাজরাজ নামক দুটি আরব গোত্র ইয়েমেন থেকে ইয়াসরিব আসে এবং প্রাধান্য বিস্তার করে।[৪] এই দুটি গোত্র একসময় নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। ইহুদি গোত্রগুলো এসময় এদের সাথে মিত্রতায় আবদ্ধ হয়।[৩][৪][৫] বনু কুরাইজা গোত্র আরব বনু আউসের সাথে মিত্রতা করেছিল।[৬]
৬২২ সালে মুহাম্মদ মদিনায় হিজরত করেন। এরপর বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে মদিনা সনদ নামক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[২][৭] হিজরতের পর মক্কার কুরাইশদের সাথে মদিনার মুসলিমদের মধ্যে কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এছাড়াও মুসলিমদের সাথে মদিনার ইহুদিদের মধ্যেও বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।[৬]
খন্দকের যুদ্ধের সময় কুরাইশ ও তাদের মিত্ররা মদিনা শহর অবরোধ করে। মদিনার চারপাশে পরিখা খুড়ে প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। বনু কুরাইজা এসময় কুরাইশদের সাথে যোগ দিয়ে চুক্তি লঙ্ঘন করে। তারা ভিন্ন দিক থেকে মুসলিমদের উপর হামলার পরিকল্পনা করেছিল। যুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর মুসলিমরা তাদের গোত্রের উপর অবরোধ করে। শেষপর্যন্ত সাদ ইবনে মুয়াজকে বিরোধ মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষ থেকে বিচারক নিযুক্ত করা হয়।[৮][৯] সাদ গোত্রের সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ [১০] সদস্যকে হত্যা এবং নারী ও শিশুদেরকে দাস হিসেবে বন্দী করার নির্দেশ দেন।[৮][৯][৯][১১][১২][১৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "List of Battles of Muhammad"। ১১ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৫।
- ↑ ক খ Watt, Encyclopaedia of Islam, "Kurayza, Banu".
- ↑ ক খ Peters, Muhammad and the Origins of Islam, p. 192f.
- ↑ ক খ Watt, Encyclopaedia of Islam, "Al-Madina".
- ↑ Encyclopedia Judaica, "Qurayza".
- ↑ ক খ Watt, "Muhammad", in: The Cambridge History of Islam.
- ↑ Alford Welch, Encyclopaedia of Islam, "Muhammad".
- ↑ ক খ Peterson, Muhammad: the prophet of God, p. 125-127.
- ↑ ক খ গ Ramadan, In the Footsteps of the Prophet, p. 140f.
- ↑ ডাঃ শামসুল আরেফিন। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড (কুরাইযার মৃত্যুদন্ড)। মাকতারুল আজহার। পৃষ্ঠা ১২৪।
- ↑ Hodgson, The Venture of Islam, vol. 1, p. 191.
- ↑ Brown, A New Introduction to Islam, p. 81.
- ↑ Lings, Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources, p. 229-233.
https://www.pathoftrue.com/2021/01/blog-post_28.html?m=1 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০২১ তারিখে